বিগত তিন দশক ধরে ইউরাপের বিভিন্ন জনপদে বিশেষত ব্রিটেনে এক নীরব বিপ্লব সংঘটিত হচ্ছে এবং প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় যোগ হচ্ছে নতুন মাত্রা। ব্রিটিশ প্রচার মাধ্যমে ইসলামের নামে আতঙ্ক সৃষ্টি (Islamophobia) সাধারণ নিয়ম। ব্রিটিশ মিডিয়া অষ্টপ্রহর মুসলমানদের টার্গেট করে ভিলেন, মৌলবাদী, সন্ত্রাসী হিসেবে চিত্রায়িত করা সত্ত্বেও মুসলমানদের অগ্রযাত্রা অব্যাহতগতিতে চলছে। নও মুসলিমদের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি প্রসারিত হচ্ছে মসজিদের পরিধিও। মুসলমানরা বহু পরিত্যক্ত গির্জা কিনে রূপান্তরিত করেছে মসজিদে। এটা ইসলামের অন্তর্নিহিত শক্তির বহিঃপ্রকাশ। ত্রিত্ববাদের পাদপীঠ পরিণত হয় তাওহিদবাদীদের ইবাদতগাহে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বহু উচ্চ শিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ পেশাজীবী মানুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ায় গোটা ব্রিটেনে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পবিত্র কোরআনের তাফসির, হাদিস, ফিকাহ, ইসলামের ঐতিহ্য ও ইতিহাসের বিভিন্ন গ্রন্থাদি ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়ে ব্রিটেনের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমাগতভাবে। ইসলামিক স্কুলের পাশাপাশি গড়ে উঠছে বিভিন্ন মাদ্রাসা। বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের বহু মেধাবী আলিম দাওয়াত, তাবলিগ, তালিম ও গবেষণার কাজে ব্রিটেনের নানা স্থানে, নানা প্রতিষ্ঠানে ইসলামের খিদমতে নিয়োজিত রয়েছেন। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মুসলমানরা বেশিরভাগ বসবাস করে লন্ডন, বার্মিংহাম, লিড্স, ম্যানচেস্টার, লাইচেষ্টার, সাউথ ওয়েলস, ইয়র্কশায়ার, মিডল্যান্ড, নর্থ ওয়েস্ট ও লিভারপুল। কেবল লন্ডনে বাস করে চার লাখ মুসলিম। ব্রিটেনে মসজিদ/নামাজের ঘরের সংখ্যা প্রায় এক হাজার। Regent Park-এ অবস্থিত কেন্দ্রীয় মসজিদটি লন্ডনের সবচেয়ে বড় মসজিদ। লিভারপুলের মসজিদ ব্রিটেনের প্রাচীন মসজিদগুলোর অন্যতম। প্রায় প্রতিটি মসজিদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ইসলামিক সেন্টার। মসজিদের ভূমিকা অনেকটা আমাদের দেশের মাদ্রাসার মতোই। শিশু-কিশোরদের ইসলাম ও কোরআন সম্পর্কে প্রাথমিক পাঠদানের ক্ষেত্রে মসজিদগুলোর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মিলনক্ষেত্র হচ্ছে মসজিদ। বর্তমানে ব্রিটেনে ৩ লাখ ৫০ হাজার স্কুলগামী মুসলিম ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ক্রমবর্ধিষ্ণু বিপুলসংখ্যক শিশুর শিক্ষার চাহিদা মেটানোর জন্য আরও ইসলামিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। আইরিশ ঔপন্যাসিক জর্জ বার্নাড শ-এর মন্তব্য সফল হতে চলেছে দেখে অবাক হতে হয়। বহু বছর আগে তিনি মন্তব্য করেন :
‘আগামী একশ’ বছরের মধ্যে ইংল্যান্ড তথা ইউরোপকে শাসন করার সুযোগ যদি কোনো ধর্মের থেকে থাকে, সেটা আছে একমাত্র ইসলামের। আমি সব সময় হজরত মুহাম্মদের (সা.) ধর্মকে উচ্চ মর্যাদা দিয়ে এসেছি এর বিস্ময়কর প্রাণশক্তির কারণে। আমার বিবেচনায় এটি একমাত্র ধর্ম যা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম, সব যুগেই রয়েছে এর আবেদন। হজরত মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক আনীত ধর্ম সম্পর্কে আমি ভবিষ্যদ্বাণী করেছি যে, এটি আজকের ইউরোপে যেমন গ্রহণযোগ্য তেমনি আগামীতেও ইউরোপে এর গ্রহণযোগ্যতার কমতি থাকবে না।’
ব্রিটেনের সাউথএন্ড এলাকায় বসবাসরত মুসলমানদের নামাজের বড় ধরনের জামাত ও দাওয়াতি সম্মেলন করার জন্য পর্যাপ্ত স্থানের তীব্র অভাব বহুদিনের। দি এসেক্স জামে মসজিদ ট্রাস্ট লিমিটেড নামক একটি সংস্থা এ এলাকায় ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে নামাজের এবং দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রাথমিক অবস্থায় ছোট্ট মুসলিম কমিউনিটি ৫৩ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে পরিত্যক্ত একটি ওয়ার্কশপ কিনে নেয়। ১৩ হাজার পাউন্ড সদস্যদের চাঁদা এবং ৪০ হাজার পাউন্ড কর্জে হাসানার মাধ্যমে এ অর্থ জোগাড় করা হয়। ওয়ার্কশপকে কেন্দ্র করে নামাজ ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে থাকে। ধীরে ধীরে মুসল্লিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় নামাজের জায়গার ব্যাপক সঙ্কট দেখা দেয়। জুমার নামাজের সময় স্থানের অভাবে বহু মুসল্লিকে গলিপথের দ্বারে, সিঁড়িতে অথবা জুতা রাখার স্থানে নামাজ আদায় করতে হয়। এসব সমস্যার সমাধানে মুসলিম কমিউনিটি মসজিদ সমপ্রসারণের উদ্যোগ নেয়। আল্লাহ তায়ালার মেহেরবাণীতে ইউনাইটেড রিফর্মড চার্চ নামক একটি অব্যবহৃত গির্জা এবং এর সন্নিহিত চারটি আবাসিক ভবনের সন্ধান মেলে। কর্তৃপক্ষ মুসলমানদের কাছে এ গির্জা বাংলাদেশী প্রায় ১৪ কোটি টাকায় বিক্রি করতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়। গির্জা ক্রয়, সংস্কার, আইনগত রেজিস্ট্রেশন ফি ইত্যাদি বাবত সর্বমোট এক মিলিয়ন পাউন্ডের প্রয়োজন। এরই মধ্যে দি এসেক্স জামে মসজিদ ট্রাস্ট লিমিটেড স্থানীয় মুসলমানদের কাছ থেকে ৩,০০,০০০ পাউন্ড সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। মসজিদটির কাজ সম্পন্ন করতে আরও ৭,০০,০০০ পাউন্ডের প্রয়োজন পড়বে। এ গির্জাটি ক্রয় করার পর মসজিদকেন্দ্রিক এক বিশাল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, যা ব্রিটেনে বসবাসরত মুসলমানদের বংশ পরম্পরায় ধর্মীয়, শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হবে। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক, কীর্তিমান বাংলাদেশী ইসলামিক স্কলার মাওলানা মাহমুদুল হাসান মসজিদের বর্তমান ইমাম।
সমপ্রতি কধঃযবত্রহব খবমমব কর্তৃক Daily Echo-তে প্রকাশিত এক সংবাদ প্রতিবেদনে জানা যায়, গির্জা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পাদিত এক চুক্তি অনুসারে সমপ্রতি উক্ত গির্জার (The Chelmsford Avenue United Reformed Church) চাবি মুসলিম ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়। উক্ত গির্জাটি একশ’ বছর আগে নির্মিত হয় এবং ২০০৭ থেকে এটা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। উবত্বশ এড়ড়ফুবধত্ নামক একজন যাজক যিনি ৪১ বছর যাবত্ এ গির্জার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তিনি এক সাক্ষাত্কারে বলেন—গির্জার ভবনটি মসজিদে রূপান্তরিত হলেও এটা ইবাদতের স্থানরূপে বর্তমান থাকবে। Essex Jame Mosque Trust-এর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শামসুদ্দীন তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, মিল্টন রোড থেকে মসজিদ নতুন স্থানে স্থানান্তর করে সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিক করা হচ্ছে।
দাওয়াতি কার্যক্রম
যুক্তরাজ্য ইসলাম প্রচারকদের জন্য এক উর্বর ক্ষেত্র। গোটা ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডজুড়ে রয়েছে তাবলিগ জামাতের দাওয়াতি কর্মসূচি। বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় গড়ে ওঠা তাবলিগি মারকাযগুলো দাওয়াতি কাজে বেশ সফলতা লাভ করেছে। বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে যেসব মেধাবী ছাত্র-শিক্ষক উচ্চ শিক্ষা লাভের উদ্দেশে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গমন করেন তাদের মধ্যে তাবলিগি প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। অমুসলিম জনগোষ্ঠীর মাঝেও দাওয়াতি প্রোগ্রাম সক্রিয় রয়েছে। ব্রিটেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত মুসলমানদের মাঝে কয়েকটি ইসলামী সংগঠন তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। প্রতিবছর সরকারের অনুমতি নিয়ে বড় আকারের ইসলামী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ সরকার ঐতিহ্যগতভাবে কাদিয়ানি মতবাদের পৃষ্ঠপোষক ও অর্থ যোগানদাতা। কাদিয়ানি ধর্ম প্রচারকরা রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যে স্যাটালাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষায় কাদিয়ানি মতবাদ প্রচার করে থাকে। ফলে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী থেকে ব্রিটেনে আগত মুসলমানরা কাদিয়ানীদের মুসলমান মনে করে থাকেন। এ ভুল নিরসন ও সঠিক ইসলাম পেশ করার জন্য আন্তর্জাতিক মজলিসে খতমে নবুওয়াতের উদ্যোগে ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার, লিভারপুল, সারে, বার্মিংহাম, বিস্টল, গ্লাসগো ও লন্ডনে প্রতিবছর খতমে নবুওয়াত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আরব বিশ্বের বিভিন্ন স্কলার ছাড়াও ভারত-পাকিস্তানের স্কলাররা এতে যোগদান করেন। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা নুরুল ইসলাম সম্মেলনে অতিথি হিসেবে ভাষণ দিয়ে থাকেন। সমসাময়িক ইউরোপীয় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা, ইসলামী ধ্যান-ধারণার বিকাশ, ইসলামী সাহিত্য সৃষ্টি, ইসলামী আন্দোলনে গণমানুষকে সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে ব্রিটেনে মুসলমানরা নানাধর্মী সেবা ও শিক্ষা সংস্থা গড়ে তুলেছেন। এসব সমস্যা বৈরি পরিবেশে দ্বীনের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে। দি মুসলিম ইনস্টিটিউট, দি মুসলিম এডুকেশন ট্রাস্ট, দি কোরআন একাডেমি, দি ইসলামিক একাডেমি অব ম্যানচেস্টার, ইউনিয়ন অব মুসলিম অর্গানাইজেশন (UMO) ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন
যুক্তরাজ্যের মার্কফিল্ড পল্লীতে অবস্থিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তর ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দু’জন ইসলামী চিন্তাবিদ প্রফেসর খুরশিদ আহমাদ ও ড. মানাযির আহসান যথাক্রমে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষা ও জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীল উত্কর্ষের কেন্দ্ররূপে ফাউন্ডেশনকে গড়ে তোলাই হচ্ছে উদ্যোক্তাদের দৃষ্টিভঙ্গি। ইসলামিক ফাউন্ডেশন মূলত শিক্ষা, গবেষণা, প্রকাশনা, প্রশিক্ষণ তথা আন্তঃধর্ম ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপের কেন্দ্র। ইসলাম সম্পর্কে ব্যাপক গবেষণা, মুসলিম ও অপরাপর ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিদ্যমান সহমর্মিতামূলক সম্পর্ক দৃঢ়করণ, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি এবং মুসলিম জনগোষ্ঠী তথা বিশ্ব মানবতার জন্য একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত্ সৃষ্টিতে অবদান রাখাই হচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অন্যতম লক্ষ্য। ফাউন্ডেশনের রয়েছে ইসলাম ও বিশ্বের প্রধান প্রধান ধর্ম ও সংস্কৃতি নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ের দুর্লভ গ্রন্থ, সাময়িকী ও দলিল-দস্তাবেজসমৃদ্ধ এক বিশাল পাঠাগার। আরবি, উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় রচিত পাঠাগারে গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। ফাউন্ডেশন এরই মধ্যে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাডেমিক সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে Loughborough বিশ্ববিদ্যালয়, জেদ্দাকেন্দ্রিক ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং মরক্কোর ইসলামী শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ISESCO) এ পর্যন্ত ফাউন্ডেশন কোরআন, হাদিস, সীরাত, রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন, ব্যবহার শাস্ত্র, দাওয়াত, ইসলামী আন্দোলন, হস্ত নির্মিত ইসলামী শিল্পকর্ম, নারী অধিকার, ইউরোপীয় ও ব্রিটিশ মুসলমানদের আত্ম পরিচিতি ও খিস্টান-মুসলিম সম্পর্ক বিষয়ে ইংরেজি ভাষায় তিন শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশ করেছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে মুসলমান
বিভিন্ন পেশায় বিশেষত শিল্প ও ব্যবসায় মুসলমানদের সংখ্যার হার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যানের অভাবে বলা না গেলেও এটা বাস্তব সত্য যে, ব্রিটিশ অর্থনীতির উন্নয়নে শিল্পপতি, বৃহত্তর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক এমনকি দোকানদার হিসেবে মুসলিম সমপ্রদায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ব্রিটেনে স্যার আনোয়ার পারভেজের মতো অনেক শিল্পপতি আছেন যাদের প্রত্যেকের বার্ষিক লেনদেনের পরিমান ৭০০ মিলিয়ন পাউন্ড বা তার চেয়েও বেশি। সামী আহমদ, নূন প্রোডাক্টসের নূন ও লর্ড নাজির আহমদ সফল ব্যবসায়ী হিসেবে ব্রিটেনের বুকে নিজেদের আসন গড়ে নিয়েছেন। লর্ড নাজির আহমদ হালাল ওয়ার্ল্ড পিএলসি নামে হালাল খাদ্য সামগ্রীর একটি বড় ধরনের ব্যবসা চালু করেছেন, যাতে করে মুসলমানরা শূকরের পরিবর্তে শরীয়তমতে জবাই করা মুরগি, গরু, ছাগল, মেষের গোশত কিনতে পারেন। তিনি তাঁর প্রকল্পে ৫০০ লোক নিয়োগের ব্যবস্থা চূড়ান্ত করেছেন এবং স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বাজারে শেয়ার ছেড়ে ৩০ লাখ পাউন্ডের ফান্ড গড়ে তোলার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন। ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরাঞ্চলে হালাল সামগ্রীর দোকান গড়ে উঠছে, এভাবে হালাল সামগ্রীর ব্যবসার মাধ্যমে হালাল জীবিকা অর্জনের একটি সুষ্ঠু পরিবেশ ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। অনুরূপভাবে ট্যাক্সি চালনা, রেস্টুরেন্ট পরিচালনা, দোকানদারি ও ছোটখাটো ব্যবসায় মুসলমানরা অর্থনৈতিক পুঁজি এবং শারীরিক শ্রম বিনিয়োগ করছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ব্রিটেনে শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রকাশনা, দাওয়াত, অর্থনীতির ক্ষেত্রে মুসলমানরা অচিরেই প্রাধান্য বিস্তারকারী শক্তি (Dominant Factor) হিসেবে আবির্ভূত হবে।
No comments :
Post a Comment