বিভিন্ন রোগ, দুর্ঘটনা বা জন্মগত ত্রুটি দূর করতে ব্যবহার হয় কসমেটিক সার্জারি ও লেজার প্রযুক্তি। এসথেটিক সার্জারি নামে পরিচিত। এ চিকিৎসা পদ্ধতি সৌন্দর্যচর্চা ও বডি শেপিংয়ের জন্য বেশ জনপ্রিয়। লেজার ট্রিট-এর ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম বলেন, 'লেজারে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। বলিরেখা, ব্রণ সমস্যা, মুখের কালো দাগ, মেছতা, চুল পড়া, শরীরের মেদ কমানো- সব কিছুই এখন লেজার ও এসথেটিক সার্জারির মাধ্যমে সম্ভব।'
সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত এবং কোনো রকম কাটাছেঁড়া ছাড়াই করা যায় এ চিকিৎসা। বিশেষ প্রকারের আলোকরশ্মির মাধ্যমে ত্বকে লেজার চিকিৎসা করা হয়। সূর্যের আলোর একটি নির্দিষ্ট ওয়েভ লেংথকে আলাদা করে তার ক্ষমতা অনেক গুণ বাড়িয়ে মানুষের শরীরে বিশেষ পরিবর্তন আনা সম্ভব।
সেবাসমূহ
অ্যান্টি এজিং ট্রিটমেন্ট
সাধারণত বয়সের কারণে বা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে, যাকে বলে রিংকেলস বা বলিরেখা। যেকোনো বয়সী মানুষের মুখে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। কপালে, চোখের কোণে, ঠোঁটের দুই পাশে ও গলায় সাধারণত রিংকেলস পড়ে। বোটক্স, ফিলার এবং মেজেথেরাপির মাধ্যমে রিংকেলস দূর করা সম্ভব। এ পদ্ধতিতে বাঁকা নাকও সোজা করা হয়।
হেয়ার রিমুভাল
সবার শরীরেই কমবেশি পশম থাকে। তবে কখনো কখনো অবাঞ্ছিত পশম সৌন্দর্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। হরমোনের কারণে শরীরের বা মুখের কোনো অংশে অনেক বেশি পশম থাকতে পারে, যা সৌন্দর্য হানি করে। লেজারের মাধ্যমে ধীরে ধীরে এ পশমের বৃদ্ধি কমিয়ে একেবারে নির্মূল করা সম্ভব। তবে বেশ কয়েকটি সেশনে লেজার থেরাপি নিতে হয়।
অ্যান্টিমার্কস ট্রিটমেন্ট
মুখে মেছতা, ব্রণ, পক্স অথবা যেকোনো ধরনের দাগ থাকলে অ্যান্টিমার্কস ট্রিটমেন্ট করা হয়। লেজার এবং কসমেটিক সার্জারির সমন্বয়ে এ চিকিৎসা করা হয়। কেমিক্যাল পিলিং, ডায়মন্ড পিল, লেজার রিসারফেসিং, ফিলার, রেড অ্যান্ড ব্লু এলইডিসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে অ্যান্টিমার্কস ট্রিটমেন্ট করা হয়। এতেও কয়েকটি সেশনের প্রয়োজন হয়।
ফাটা দাগ
মুটিয়ে যাওয়া বা মাতৃত্বের কারণে অনেক সময় ত্বকে ফাটা দাগের সৃষ্টি হয়। লেজারের মাধ্যমে ত্বকের ফাটা দাগ দূর করা সম্ভব। মেজোথেরাপি, ডায়মন্ড পিল, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি, মাইক্রোডারমাব্রেশনসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে ত্বকের ফাটা দাগ দূর করা হয়।
শ্বেতী
শ্বেতী শুধু সৌন্দর্য হানিই করে না; সামাজিকভাগে বিড়ম্বনারও শিকার হতে হয়। অথচ লেজারের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা যায়। বিভিন্ন ধরনের লেজার দিয়ে এ চিকিৎসা করা সম্ভব। এতে ফেটোথেরাপি, ফটোডাইনামিক থেরাপি, মেলানোসাইট ট্রান্সপ্লান্টেশন, গ্রাফটিং উল্লেখযোগ্য।
বডি শেপিং
জন্মগতভাবে সবাই সুগঠিত দেহের অধিকারী হয় না। অনেকে সুঠাম দেহের অধিকারী হয়েও পরে মোটা হয়ে তা নষ্ট করে ফেলে। এসথেটিক সার্জারির মাধ্যমে মেদ কমানো এবং ত্বক টানটান করার মাধ্যমে বডি শেপিং করা হয়। কেভিটেশন, ভেক্যুয়াম, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি, লেজার লাইপোসাকশন এবং ডায়েট প্ল্যানের মাধ্যমে এ চিকিৎসা করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রথমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগীর দেহের দৈনিক ক্যালরির চাহিদা এবং কতটুকু মেদ কমাতে হবে তা নির্ণয় করা হয়। এতে কয়টি সেশনে মেদ কমানো হবে তাও জানানো হয়। সাধারণত প্রতিটি সেশনে আধা ইঞ্চি থেকে এক ইঞ্চি মেদ কমানো যায়। এটা সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত এবং কাটাছেঁড়াবিহীন পদ্ধতি।
চিকিৎসার নিয়ম
আমাদের দেশে এ ধরনের চিকিৎসার জন্য বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিটি সেন্টারে কয়েকজন লেজার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকেন। প্রথমে রোগীর সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলা হয়। তারপর তাঁরা সমস্যা অনুযায়ী সমাধান দেন। আর প্রাথমিক কিছু পরীক্ষাও করেন এবং চিকিৎসা পদ্ধতি, কয়টি সেশন ও ওষুধ সম্পর্কে রোগীকে জানান। কোনো কোনো সমস্যা কেবল ওষুধেই ভালো হয়ে যেতে পারে।
কিছু চিকিৎসাকেন্দ্রের ঠিকানা
লেজার মেডিক্যাল সেন্টার
সীমান্ত স্কয়ারের পেছনে, রোড-২, ধানমণ্ডি, ঢাকা। ফোন : ৮৬১৩৭৬৭, ০১৭২৭০০১১৯৯
লেজার ট্রিট
বাড়ি-৩২, রোড-১১, ব্লক-জি, বনানী, ঢাকা-১২১৩। ফোন : ০১৭৫০০১০০২০, ০১৭৫০০১০০৩০
লেজার চেইন
হোসাইন প্লাজা, বাড়ি-১, চতুর্থ তলা, রোড-১৫, মিরপুর রোড, ধানমণ্ডি, ঢাকা। ফোন : ৮১২৩৪২৩, ০১১৯০৫৪১৯২৭
লেজার স্কিন কেয়ার
চৌরঙ্গী ভবন, তৃতীয় তলা, ১২৪/এ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা।
ফোন : ৯৬৬০৬৩৪, ০১৭৩২৩৯৪০০৫।
No comments :
Post a Comment