Blogger Tricks

নেশা : ইসলাম কী বলে


নেশা মারাত্মক ক্ষতিকর মানব সমাজের জন্য। এটি যে স্বাস্থ্যের জন্য ও সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে প্রতিবন্ধক সে ব্যাপারে বহু আগেই চিকিত্সাবিজ্ঞানীরা অভিমত দিয়েছেন। আল্লাহতাআলা মানব জাতিকে নেশার ক্ষতিকর সংশ্লিষ্টতা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং নেশাকর ও ক্ষতিকর এহেন কুঅভ্যাস থেকে মুক্ত থাকা এবং সুস্থ-সুন্দর পরিবেশের একটি সমাজ গড়ে তোলা প্রতিটি নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব। তামাক নেশাকর বস্তুর মাঝে অন্যতম। চিকিত্সাবিদরা তামাক এবং তামাক দিয়ে প্রস্তুত অন্যান্য নেশাকর জিনিসকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর আখ্যা দিয়েছেন। তারা এর দ্বারা মানবজীবনে অসংখ্য রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া সম্পর্কে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন।
ওলামায়ে কিরামের একটি বিশাল অংশ তামাককে শরাবের মতো মারাত্মক ক্ষতিকর আখ্যা দিয়ে এই ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকার জন্য কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। তারা তামাক বা তামাক দ্বারা প্রস্তুতকৃত পণ্য ব্যবহারকারীদের ফাসেক আখ্যা দিয়েছেন। আজকাল সমগ্র বিশ্বে তামাকের প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য জোরদার স্লোগান তোলা হয়েছে। পালন করা হচ্ছে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। বিড়ি-সিগারেটের গায়ে লেবেল লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে, ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’, ‘ধূমপান বিষপান’ ইত্যাদি নীতিবাক্য। তথাপি ধূমপানের এই মারাত্মক ব্যাধি সমাজকে গ্রাস করেই চলেছে। তামাকের দ্বারা প্রস্তুত হচ্ছে আরো নতুন নতুন নেশাকর ও ক্ষতিকর পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর হচ্ছে গুল। গুল মানব সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে। জর্দা বিষয়টিও হালকা করে দেখার মতো নয়।
তামাক এবং তামাক দ্বারা প্রস্তুত সব পণ্যই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পরিবেশের জন্য এগুলো মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক সেবনের পর যত্রতত্র থুথু নিক্ষেপের দ্বারা পরিবেশ নোংরা হচ্ছে। বিশ্বের অগ্নিকাণ্ডের অধিকাংশই সূত্রপাত হচ্ছে বিড়ি-সিগারেটের উচ্ছিষ্ট অংশের দ্বারা। এর দ্বারা মানব জাতি কত বড় বড় বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
যদিও তামাক বা তামাক দ্বারা প্রস্তুত পণ্যসামগ্রী শরাবের সমপর্যায়ভুক্ত নয়, তথাপি এসব সামগ্রী যে তার কাছাকাছি, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা যেসব দ্রব্য মানব দেহ, মস্তিষ্ক, বিবেক-বুদ্ধির জন্য ক্ষতিকর এবং সম্পদের অপচয় হিসেবে সাব্যস্ত হবে তা হালাল হতে পারে না বরং তা হালাল না হওয়াটাই স্বাভাবিক। উত্তম ও ভালো হিসেবে সেটাই স্বীকৃত, যা মানব দেহে স্থায়িত্ব এনে, দেমাগে স্বস্তি এনে দেয়। আর গোনাহ হিসেবে সেটাই স্বীকৃত, যা মানব দেহের জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনে, দেমাগকে অস্থির করে তোলে। এ জন্য মুফতী সাহেবের কাছে ফতোয়ার দ্বারস্থ হতে হয় না। আল্লাহতাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘হে মানব জাতি! তোমরা যারা ঈমান এনেছো (তোমরা মেনে রেখ), মদ, জুয়া, পূজার বেদী ও ভাগ্যনির্ণায়ক শর হচ্ছে ঘৃণিত শয়তানের কাজ। অতএব তোমরা তা (সম্পূর্ণরূপে) বর্জন কর। আশা করা যায়, তোমরা মুক্তি পেয়ে যাবে। শয়তান এই মদ ও জুয়ার মধ্যে (ফেলে) তোমাদের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে দিতে চায় এবং এভাবে সে তোমাদের আল্লাহতাআলার স্মরণ ও নামাজ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। তোমরা কি (একাজ থেকে) ফিরে আসবে না? সূরা মায়িদা: আয়াত-৪০-৪১

No comments :

Beingbd moved as sohoz-tech