Blogger Tricks

রোজায় সোজা রুটিন


রোজার মাসে পাল্টে যায় জীবনধারা। খাবার, পোশাক, ঘুম_গোটা দিনের রুটিনেই আসে পরিবর্তন। তাই অফিস, কাজ আর সংসার সামলে নিতে চাই ঠিকঠাক রুটিন।

পরিবার ও চাকরি
রোজায় চাকরিজীবী নারীদের একটু বেশিই চাপে থাকতে হয়। অফিস সামলে বাসায় ফিরেই ইফতারের আয়োজন, তারাবির নামাজের মধ্যে আবার সেহরির প্রস্তুতি। এ ক্ষেত্রে একটু রুটিন করে নিলে কাজটা অনেক সহজ হয়। এ জন্য ছুটির দিনের সময়টা কাজে লাগান। পেঁয়াজ, আলু, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা বেশ খানিকটা কেটে রাখতে পারেন ফ্রিজে। মসলা বেটে ফ্রিজে রাখুন পুরো সপ্তাহের জন্য। মাছ ধুয়ে লবণ ও হলুদ মেখে জিপ লক ব্যাগে ডিপে রাখুন। মুরগি ধুয়ে পরিষ্কার করে টুকরো করে রাখুন। পুরুষদেরও উচিত এ সময়ে যথাসম্ভব ঘরের কাজে সাহায্য করা। যেহেতু রোজায় অফিসের সময় বেশ খানিকটা কমিয়ে দেওয়া হয়, তাই কাজের চাপ বেশি থাকে। এ কারণে যথাসম্ভব চেষ্টা করুন অফিসে যাতে দেরি না হয়। কাজের অজুহাত দিয়ে অফিস থেকে আগে বের হবেন না।
ইফতার ও সেহরির আগের প্রস্তুতি
ইফতার ও সেহরির পূর্বপ্রস্তুতি সম্পর্কে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের গৃহব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেলিনা আখতার বলেন, ইফতারের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে প্রস্তুতি শুরু করুন। গৃহিণীরা দিনের শুরুতে এবং কর্মজীবীরা রাতেই ইফতারের পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারেন। সময় বাঁচাতে চার-পাঁচ দিনের ছোলা একসঙ্গে সিদ্ধ করে ফ্রিজে রাখুন। ইফতারের দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগে রান্না করে নিন। ঘুগনির ডাবলির ক্ষেত্রেও তা-ই। পেঁয়াজুর ডালও বেশ খানিকটা বেটে ডিপ ফ্রিজে বঙ্ েরাখুন। ইফতারের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে ফ্রিজ থেকে বের করুন। ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, কাঁচামরিচ বা পেঁয়াজ কেটে বঙ্ েকরে ফ্রিজে রাখুন। বিশেষ কোনো আইটেম, যেমন_হালিম বা পিঠা করতে চাইলে তাও আগে তৈরি করে রাখুন। প্রয়োজনে ইফতারের ২০ মিনিট আগে গরম করুন। মচমচে ও ভাজা খাবারগুলো সবার শেষে তৈরি করুন, যাতে গরম গরম পরিবেশন করা যায়। শরবত, লাচ্ছি, বায়তা ইত্যাদি কিছুটা আগেই তৈরি করে ফ্রিজে রাখুন। ইফতার শুরুর অন্তত ১০ মিনিট আগে টেবিলে সব খাবার সাজিয়ে ফেলুন। সেহরির জন্য অন্তত এক ঘণ্টা আগে প্রস্তুতি নেওয়া ভালো। ভাত রাইস কুকারে রান্না করে রাখুন রাতে শোয়ার আগেই। চাইলে ভোররাতেও রান্না করতে পারেন। সব ধরনের খাবার পরিবেশনের আগে অবশ্যই গরম করে নেবেন। ঠাণ্ডা খাবারের স্বাদ পাওয়া যায় না, খেতেও ভালো লাগে না। চটপট খাবার গরম করতে ব্যবহার করুন মাইক্রোওয়েভ ওভেন। সেহরির শেষ সময়ের অন্তত ৪০-৪৫ মিনিট আগে খাওয়া শুরু করুন। পুরুষদের উচিত ইফতার ও সেহরির প্রস্তুতিতে যতটা সম্ভব সাহায্য করা। বিশেষ করে ইফতার ও সেহরি টেবিলে সাজানোর কাজটা তাঁরা করতে পারেন।
খাবারদাবার
যেহেতু এবার রোজার সময়টা গরমকালে এবং দিনের দৈর্ঘ্য বেশি, তাই খাবারের দিকে একটু বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে_বললেন ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টারের অধ্যক্ষ পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার। তিনি আরও বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় রোজার মাসে সংযমের পরিবর্তে খাদ্যবিলাসিতা। ফলে দেখা দেয় অসুস্থতা। ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত অন্তত তিন লিটার পানি পান করুন। ইফতারের সময় ফলের জুস, শরবত, লাচ্ছি অর্থাৎ পানীয় বেশি পান করুন। প্রোটিনের চাহিদা পূরণে হালিম খেতে পারেন। ইফতারে দই, চিঁড়া, কলা, মৌসুমি ফল ইত্যাদি অবশ্যই খাবেন। মৌসুমি ফল দিয়ে ফ্রুট সালাদ, ককটেল বা ফালুদা খেতে পারেন। তেলে ভাজা খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। কোমল পানীয়, ফাস্টফুড আইটেম, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার একেবারেই খাবেন না। রাতে এবং সেহরিতে খাবার হিসেবে জটিল শর্করা বাদে অন্তর্ভুক্ত করুন; যেমন_গম ভাঙানো আটার রুটি, বার্লি ও ছাতু। ভাতও খেতে পারেন। সঙ্গে মৌসুমি শাকসবজি ও সালাদ খান যতটা সম্ভব। মাছ, মাংস, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেতে পারেন। তবে চর্বিজাতীয় খাবার বাদ দিন। ইফতার ও সেহরির পর বেশি চা পান করা থেকে বিরত থাকুন।

No comments :

Beingbd moved as sohoz-tech