ইতিহাসে নাম লেখালেন ব্রিস্টলের শেইলা কুক। ৬২ বছর বয়সী শেইলা পেশায় ছিলেন একজন সেবিকা। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভুগছিলেন হতাশায়। এখন তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মুক্ত হলেন এই ধরনের ‘অনিরাময়যোগ্য’ হতাশা থেকে।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শেইলা ভুগছিলেন হতাশায়। অবস্থা এমন হয়েছিল যে, আত্মহত্যাকেই তিনি ভেবেছিলেন মুক্তির একমাত্র পথ। প্রায়শই ভুলে যেতেন নাওয়া-খাওয়া। একসময় চাকরি ছাড়তে বাধ্য হলেন। তার গবেষক স্বামীকেও চাকরি ছাড়তে হলো স্ত্রীর সার্বক্ষণিক শুশ্রƒষার জন্য।
এখন অবস্থা অন্যরকম। নাতি-নাতনি নিয়ে শেইলা বেশ সুখেই আছেন। কেটে গেছে সব হতাশা। যুগান্তকারী একটি অস্ত্রোপচার বদলে দিয়েছে তার জীবন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে সৃষ্টি করেছে ইতিহাস। আর তিনি হলেন সেই ইতিহাসের অংশ।
‘ডিপ ব্রেইন স্টিমুলেশন’ বা ডিবিএস নামে একটি পরীক্ষামূলক অস্ত্রোপচার সম্প্রতি চালানো হয় শেইলার মস্তিষ্কে। এই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসকরা ম্যাচবাক্সের আকৃতির একটি ইলেক্ট্রনিক স্পেসমেকার দিয়ে শেইলার মস্তিষ্কের বিশেষ কোষগুলোকে সবসময় চাঙ্গা করে রেখেছেন। ফলে, শেইলা ফিরে পেয়েছেন তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা। নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন তার আবেগ।
‘গত ১০ বছরে এই প্রথম আমি সুখী বোধ করছি। এই চিকিৎসার মধ্য দিয়ে আমার জীবনটাই বদলে গেছে। আমি এখন বই পড়তে পারছি, ভারী কাজ করতে পারছি। সবচে সুখের কথা, আমি আমার পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটাতে পারছি,’ নিজের আবেগটাকে এভাবেই প্রকাশ করলেন শেইলা।
নর্থ ব্রিস্টল জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ট্রাস্টের নিউরোসার্জন নিকুঞ্জ প্যাটেল ও ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অ্যান্ডিয়া ম্যালিজিয়া মিলে চালিয়েছেন এই পরীক্ষা।
ড. ম্যালিজিয়া বলেন, ‘আমাদের রোগীরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা বেশ কষ্ট করছে। এদের ভেতর শেইলা রাজি হলেন এই পরীক্ষামূলক চিকিৎসায়। আশার কথা, এখন তিনি বেশ সুস্থ বোধ করছেন।’
No comments :
Post a Comment